
বর্তমান প্রেক্ষাপট
ও
আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের পটভূমি
চট্টগ্রাম জেলার সি.ডি.এ. কর্তৃক নির্ধারিত প্রথম আবাসিক এলাকা আগ্রাবাদস্থ ১৭ নং রোডে ১৯৮৮ সালে আগ্রাবাদ মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে অনেক প্রত্যাশার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে প্রায় চার হাজার একর জায়গায় স্থানীয় কিছু আন্তরিকতাপূর্ণ, উৎসাহী, উদ্যোক্তা যারা দীর্ঘকাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজের স্থানীয় মহিলা বিভাগের মধ্যে শিক্ষার অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা প্রচারের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বিশেষতঃ দেশের শিক্ষার মূল ধারায় তাদের (নারীদের) অংশগ্রহণকে উৎসাহিত, নিশ্চিতকরণ এবং সমাজজীবনে নারীদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজ নির্মাণ করেন।
আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের পটভূমি
চট্টগ্রাম জেলার সি.ডি.এ. কর্তৃক নির্ধারিত প্রথম আবাসিক এলাকা আগ্রাবাদস্থ ১৭ নং রোডে ১৯৮৮ সালে আগ্রাবাদ মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে অনেক প্রত্যাশার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে প্রায় চার হাজার একর জায়গায় স্থানীয় কিছু আন্তরিকতাপূর্ণ, উৎসাহী, উদ্যোক্তা যারা দীর্ঘকাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজের স্থানীয় মহিলা বিভাগের মধ্যে শিক্ষার অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা প্রচারের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বিশেষতঃ দেশের শিক্ষার মূল ধারায় তাদের (নারীদের) অংশগ্রহণকে উৎসাহিত, নিশ্চিতকরণ এবং সমাজজীবনে নারীদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজ নির্মাণ করেন।
আরাসকার তৎকালীন সদস্য জনাব আবু নাসেরের খামার বাড়িতে একটি চমৎকার রৌদ্রজ্জ্বল দুপুরে ১৯৮৬ সালে একটি পিকনিকে সকল উৎসাহী সদস্যগণ শহরের দক্ষিণাঞ্চলে উচ্চ শিক্ষার সোপান হিসাবে একটি মহিলা কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে ১৯৮৮ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সংসদ সদস্য এবং পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রী জনাব এল কে সিদ্দিকী, অন্যান্য সদস্যমন্ডলী প্রয়াত এম. এ. হান্নান, জনাব মুমিনুল হক সরকার, জনাব আবদুল লতিফ, জনাব আলহাজ্ব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, জনাব শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক এস. এ. সিদ্দিকী, জনাব এম. এ. আজিজ, জনাব জালাল উদ্দিন আহমেদ, জনাব মোঃ মোতাহের হোসেন, জনাব আবদুর রাজ্জাক, জনাব মোঃ শাহ আলম, জনাব আবু আহমেদ মজুমদার প্রমুখের সহযোগিতায় আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক জনাব এম. এ. মন্নান উক্ত মহরত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
একইসাথে জনাব এস.এ. সিদ্দিকী, একজন জাতীয় খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে প্রকল্পের প্রধান আর্কিটেক্ট জরিনা হোসেন বিনামূল্যে কলেজের স্থাপত্য নকশা তৈরী করেছিলেন। কলেজটি নির্মাণের জন্য চট্টগ্রামের আগ্রাবাদস্থ সি.ডি.এ. আবাসিক এলাকার মাতৃসংস্থা “আরাসকা” (আগ্রাবাদ রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া সোসিও কালচারাল এ্যাসোসিয়েশন) মোট জমি এবং সি.ডি.এ. ১নং রোডের সোনালী ব্যাংকের (মহিলা শাখা) পাশে আরও ০.৯৯৩২ একর প্লট (১২.৫ কাঠা) প্রদান করেন।
কলেজের শুরু থেকেই সাধারণ এবং স্বল্প মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অসাধারণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছিল যখন এস.এস.সি.তে সাধারণ দ্বিতীয় বিভাগ পাওয়া ছাত্রী খাদিজা ১৯৯০ সালে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম অংশগ্রহণ পরীক্ষা এইচ.এস.সি পরীক্ষা বাণিজ্য বিভাগে শীর্ষ দশ মেধা তালিকায় স্থান লাভ করেছিল। বিষয়টি, সদ্য প্রতিষ্ঠিত কলেজের জন্য ভাগ্য কবজ হিসেবে কাজ করেছিল যা চারপাশে বিশেষ করে মিডিয়ায় প্রশংসার ঝড় তুলেছিল এবং বাকীটা ইতিহাস।
এইচ.এস.সি. এবং ডিগ্রি (পাস) পর্যায়ে বর্তমানে মোট ২,৩১০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগে অত্র কলেজে অধ্যয়নরত। এটি একেবারে একটি অনস্বীকার্য সত্য যে, প্রয়াত প্রফেসর জনাব এস. এ. সিদ্দিকী কিছু সংখ্যক অনুপ্রাণীত, মেধাবী, উদ্যমী ও কঠোর পরিশ্রমী শিক্ষকের সহায়তায়, পরবর্তী প্রজন্ম হতে আরো উন্নত ফল লাভের লক্ষ্যে কলেজটিকে দৃঢ়ভাবে একটি গ্রানাইট ফাউন্ডেশনের সিংহাসনে বসিয়েছিলেন।
কলেজের অবকাঠামো
একটি চলনসই খেলার মাঠ ও দুটি প্রবেশদ্বার সহ একটি পাঁচতলা ভিত বিশিষ্ট দক্ষিণমুখী মূল ভবন ও সি.ডি.এ. ১ নং রোডস্থ আরেকটি পাঁচতলা বিশিষ্ট আই.সি.টি. ভবন।
মূলভবনের মোট ফ্লোর স্তর ৩০,০০০ বর্গফুট। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভবনটিতে মোট ২২টি কক্ষ এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য ১১টি কক্ষ রয়েছে।
আই.সি.টি ভবনের মোট ফ্লোর স্তর ১৮,৫৪০ বর্গফুট। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভবনটিতে মোট ১২টি কক্ষ এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য ৩টি কক্ষ রয়েছে।
কলেজটি জাতীয় ছাড়াও এর একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসারে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। পুরো শিক্ষা অধিবেশন বা মেয়াদ চলাকালীন সময়ে সামগ্রিক একাডেমিক বা নন একাডেমিক ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিশ বা তদুর্দ্ধ শিক্ষার্থীকে একজন গ্রুপ শিক্ষকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আনা হয়। অভিভাবক সভায় অভিভাবক এবং শিক্ষকগণ গ্রুপ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান কল্পে একে অপরের কাছাকাছি আসেন।
অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবং বর্তমান সময়ের চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের অধিকতর উন্নয়ন এবং বিশদভাবে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের লক্ষ্যে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
২০০৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এস. এ. সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর জনাব আনোয়ারা বেগম ২০০৬ সাল হতে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে উপাধ্যক্ষ জনাব সামছুননেছা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে ৩০ অক্টোবর ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ অক্টোবর ২০১৩ সালে নিজামপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ জনাব কৃষ্ণ কুমার দত্ত অত্র কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত শিক্ষক, কর্মচারি, চট্টগ্রাম সংসদীয় আসনÑ১১ এর জনাব এম. আবদুল লতিফ, এম.পি. মহোদয়ের পরামর্শে এবং বর্তমান সভাপতি জনাব মোঃ অহিদ সিরাজ চৌধুরী এর সার্বিক সহায়তায় পুরোদুস্তর কর্ম উদ্দীপনা ও কর্মশক্তি নিয়ে সামনের দিয়ে এগিয়ে চলছেন।
কলেজটি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার অন্যতম সেরা বেসরকারী কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং অধিকতর মূল্যায়ন করা হয়েছে কলেজটির নিরবচ্ছিন্ন জ্ঞান অনুসন্ধান, সত্য, ধর্ম নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি, জাতীয় এবং নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা এবং অরাজনৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বোপরি দেশের সেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত করার মহান ব্রতের কারণে বিশিষ্ট স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।
সুতরাং গুণগত মানবৃদ্ধি এবং ভাল শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়া হয় এবং নিয়মিত বিরতিতে, দৈনন্দিন চাহিদার কথা মাথায় রেখে শিক্ষকদের উন্নয়নের জন্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে জাতীয় অনুভূতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বছর জুড়ে সকল জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।
শৃঙ্খলামূলক পদক্ষেপ এবং নিরীক্ষাঃ প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষত রাখার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থ ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়।
এছাড়া বাৎসরিক নিরীক্ষা ও রুটিন কার্যের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে এটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করে।
পরিদর্শন দল
শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, বৈষম্যহীন মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি তাদের নৈতিক উন্নয়ন করতে এবং তাদের শ্রেণি উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে কলেজের সাপ্তাহিক পরিদর্শন দলের সদস্যগণ নিয়মিতভাবে সপ্তাহের প্রতিটি কার্যদিবস পর্যবেক্ষণ করেন।
কলেজের একাডেমিক কমিটি প্রতিষ্ঠানের মস্তিষ্ক হিসাবে কাজ করে। বছরব্যাপী কলেজের একাডেমিক প্রোগ্রামারদের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। এটি নিয়মিতভাবে সিলেবাস আপডেট করা, অধিবেশনের সময়সীমা পর্যবেক্ষণ ও নির্ধারণ করা এবং শিক্ষার্থীদের জ্ঞানশক্তি বৃদ্ধির লক্ষে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্লেষণাত্মক, আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা এবং জ্ঞানশক্তি বৃদ্ধির জন্য অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা পদ্ধতির আধুনিকায়ন করার মতো কাজগুলো উক্ত কমিটি করে থাকে।
যেহেতু পাবলিক পরীক্ষাটি সরকারিভাবে পরিচালিত একটি পরীক্ষা সেক্ষেত্রে এটিতে বোর্ড পরীক্ষার নীতিবহির্ভূত কাজ করার কোন সুযোগ থাকে না। তাই পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা যাতে একটি ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারে সে লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে পুরো সেশন জুড়ে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শ্রেণিÑপরীক্ষা, সাপ্তাহিক এবং মাসিক পরীক্ষা নিয়মিত নেয়া হয়।
উন্নত শিক্ষাদানের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্বের আসন প্রাপ্ত কলেজটি নেতৃত্বের দক্ষতা প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, রক্তদান এবং সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলী অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। গার্লস গাইড ও রোভার স্কাউটস্ এর কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
সময়ের চাহিদা মিটাতে এবং আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কলেজটি শিক্ষার্থীদের তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সুসজ্জিত করার লক্ষ্যে একটি মানসম্মত প্রযুক্তিগত শিক্ষার এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন করেছে।
শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অত্র কলেজকে ২০২২ সালে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এর জন্য ১৭টি ল্যাপটপ, ১টি ওয়েব ক্যামেরা, ১টি রাউটার, ১টি স্মার্ট টিভি, ১টি প্রজেক্টর, ৩৩টি চেয়ার ও ১৭টি টেবিল প্রদান করা হয়েছে।
নারীবান্ধব, শিক্ষাবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য বাংলাদেশে শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি। আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম সেই লক্ষ্যের সহযাত্রী। আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ এর লক্ষ্য মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন আলোকিত মানুষ তৈরী করা। কলেজের গভর্নিং বডি, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক মন্ডলীর ধারায় সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় ভবিষ্যত পরিকল্পনা।